মেয়েদের লজ্জাস্থানে মুখ দেওয়া কি জায়েজ




মেয়েদের যৌনাঙ্গে মুখ দেওয়া কি ইসলামে জায়েজ?

ভূমিকা

দাম্পত্য জীবনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক ভালোবাসা, স্নেহ ও মানসিক সন্তুষ্টির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ইসলাম দাম্পত্য সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রীকে একে অপরের জন্য “পোশাক” হিসেবে উল্লেখ করেছে (সূরা আল-বাকারা: ১৮৭)। অর্থাৎ তারা একে অপরকে আচ্ছাদন, সুরক্ষা ও সৌন্দর্য প্রদান করে। তবে যৌন মিলনের ধরন ও সীমারেখা নিয়ে ইসলাম কিছু স্পষ্ট বিধান দিয়েছে।
এই প্রবন্ধে আমরা মেয়েদের যৌনাঙ্গে মুখ দেওয়া, অর্থাৎ ওরাল সেক্স বিষয়ে ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গি, আলেমদের মতামত এবং স্বামী-স্ত্রীর জন্য শরিয়তের অনুমোদিত সীমা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।


১. ইসলামি শরিয়তে যৌন সম্পর্কের সাধারণ অনুমতি

ইসলামে স্বামী-স্ত্রী একে অপরের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে, এবং এটি শুধু অনুমোদিত নয়, বরং দাম্পত্য জীবনে এটি একটি সুন্নত ও পারস্পরিক অধিকারের অংশ।
কুরআনে আল্লাহ বলেন:

“তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের জন্য ক্ষেত্রস্বরূপ, সুতরাং তোমরা তোমাদের ক্ষেত্রের কাছে যাও যেভাবে তোমরা ইচ্ছা করো।”
(সূরা আল-বাকারা: ২:২২৩)

এই আয়াত প্রমাণ করে যে স্বামী-স্ত্রী যৌন মিলনের ক্ষেত্রে স্বাধীন, তবে শর্ত হলো—এটি প্রাকৃতিক ও আল্লাহর নিষিদ্ধ সীমার বাইরে না হয়


২. মুখ দিয়ে যৌনাঙ্গ স্পর্শ বা ওরাল সেক্স — ইসলামী মতামত

ওরাল সেক্স বিষয়ে কুরআন ও হাদিসে সরাসরি কোনো স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে বিভিন্ন মুফতি ও আলেমের মধ্যে এ বিষয়ে ভিন্নমত পাওয়া যায়।

(ক) জায়েজ মনে করেন যারা
কিছু আলেম বলেন—যেহেতু কুরআন বা সহিহ হাদিসে স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা নেই, তাই স্বামী-স্ত্রী পারস্পরিক সম্মতিতে এটি করতে পারে। তবে শর্ত হলো, এতে কোনো অপবিত্র পদার্থ (যেমন—মূত্র বা বীর্য) মুখে প্রবেশ করা যাবে না।
ইসলামী আইন অনুযায়ী নাপাক পদার্থ খাওয়া বা পান করা হারাম, তাই সতর্ক থাকা জরুরি।

(খ) অপছন্দনীয় বা মাকরূহ মনে করেন যারা
অনেক আলেম বলেন—যদিও এটি সরাসরি হারাম বলা হয়নি, কিন্তু এটি প্রাকৃতিক রীতি-বিরোধী, অশোভন ও ইসলামী আদবের বিপরীত। এছাড়া, যৌনাঙ্গে জীবাণু ও অপবিত্রতা থাকে, যা মুখে দেওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই তারা একে মাকরূহ (অপছন্দনীয়) বলেন এবং নিরুৎসাহিত করেন।

(গ) হারাম মনে করেন যারা
কিছু কঠোর মতের আলেম একে সরাসরি হারাম বলেছেন, কারণ তারা মনে করেন এটি অস্বাভাবিক যৌন আচরণ এবং ইসলামী আদবের বিপরীত।


৩. স্বাস্থ্যগত দিক

যৌনাঙ্গে মুখ দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে—

  • যৌন সংক্রমণ (STDs) ছড়ানোর সম্ভাবনা

  • ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস সংক্রমণ

  • মুখের ভিতর প্রদাহ বা সংক্রমণ

তাই যদি কেউ করে, তবে অবশ্যই পরিচ্ছন্নতা ও সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।


৪. ইসলামের শিষ্টাচার ও গোপনীয়তা

ইসলাম স্বামী-স্ত্রীকে একে অপরের সাথে আনন্দ উপভোগের পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছে, কিন্তু সাথে শালীনতা, পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্য রক্ষার নির্দেশও দিয়েছে।
এটি গোপন বিষয়, তাই এই ধরনের কাজ করলে তা গোপনে রাখা এবং অন্যের কাছে প্রকাশ না করাই ইসলামের শিক্ষা।


৫. উপসংহার

মেয়েদের যৌনাঙ্গে মুখ দেওয়া বিষয়ে ইসলামি শরিয়তে সরাসরি কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, তবে অধিকাংশ আলেম এটিকে নিরুৎসাহিত করেন।
যদি স্বামী-স্ত্রী পারস্পরিক সম্মতিতে করে, তবে অবশ্যই—

  1. অপবিত্র পদার্থ মুখে না যায়

  2. পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে

  3. স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি এড়াতে হবে

  4. গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে

ইসলাম সর্বদা দাম্পত্য জীবনে ভালোবাসা, সম্মান, পরিচ্ছন্নতা ও শালীনতা বজায় রাখার পরামর্শ দেয়।


  • ইসলামিক দৃষ্টিতে যৌন সম্পর্ক http://bit.ly/4oz4QE4

  • স্বামী স্ত্রী সম্পর্ক

  • ইসলামে যৌন আচরণ

  • দাম্পত্য জীবন

  • স্বামী স্ত্রী মিলন

  • ইসলামে স্বামী স্ত্রী অধিকার

  • ইসলামে স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করা

  • যৌন সম্পর্কের নিয়ম

  • ইসলামে যৌনতার সীমা

  • ইসলামী দাম্পত্য জীবন

  • স্বামী স্ত্রী ভালোবাসা

  • ইসলামে স্বামী-স্ত্রীর করণীয়.. http://bit.ly/4oz4QE4

  • Post a Comment

    0 Comments