বিএনপির জনসমর্থন কত শতাংশ

 

বিএনপির জনসমর্থন: বর্তমান অবস্থা, জরিপের ফলাফল ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা


বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবসময়ই দুটি প্রধান দল কেন্দ্রীয় ভূমিকায় থাকে—আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। ক্ষমতার পালাবদলের দীর্ঘ ইতিহাসে বিএনপি একাধিকবার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেছে। যদিও দলটি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার বাইরে, তবুও দেশের ভোটারদের বড় অংশ বিএনপিকে এখনো বিকল্প শক্তি হিসেবে দেখে।


এই ব্লগে আমরা আলোচনা করব—বিএনপির জনসমর্থনের বর্তমান চিত্র, সাম্প্রতিক জরিপের ফলাফল, সমর্থন বাড়া-কমার কারণ এবং ভবিষ্যতে দলটির সম্ভাবনা।



---


সাম্প্রতিক জরিপে বিএনপির জনসমর্থন


বাংলাদেশে জনমত জরিপ পরিচালনাকারী বিভিন্ন সংস্থার তথ্য থেকে বোঝা যায়, বিএনপির জনপ্রিয়তা সময়ে সময়ে ওঠানামা করছে।


ইনোভিশন কনসালটিং (২০২৫) এর জরিপ অনুযায়ী, যারা ভোট দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তাদের মধ্যে প্রায় ৪২% বিএনপিকে সমর্থন করেন।


তবে একই সময়ে সরাসরি প্রশ্ন করা হলে—"আপনি কাকে ভোট দেবেন?"—সে ক্ষেত্রে সমর্থনের হার কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১২–১৬% এ।


অন্যদিকে, তরুণ ভোটারদের মধ্যে জনপ্রিয়তা তুলনামূলক বেশি। জরিপে দেখা গেছে প্রায় ৩৯% তরুণ মনে করেন বিএনপি আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হবে।



এতে বোঝা যায়, জনগণের মধ্যে বিএনপির প্রতি আগ্রহ থাকলেও সরাসরি ভোট দেওয়ার ব্যাপারে অনেকেই এখনো দ্বিধায় আছেন।



---


কেন বিএনপির প্রতি সমর্থন বাড়ছে?


১. পরিবর্তনের আশা


একই দল দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকলে অনেক ভোটারের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়। বিএনপি হচ্ছে একমাত্র বড় বিরোধী দল, তাই বিকল্প শক্তি হিসেবে তাদের প্রতি সমর্থন বাড়ছে।


২. তরুণ প্রজন্মের প্রত্যাশা


বাংলাদেশে প্রতি বছর বিপুলসংখ্যক নতুন ভোটার যুক্ত হচ্ছে। এদের বড় অংশ তরুণ, যারা পরিবর্তন, কর্মসংস্থান এবং নতুন নেতৃত্ব চায়। বিএনপি যদি তরুণদের আস্থা অর্জন করতে পারে, তবে তাদের সমর্থন আরও বাড়বে।


৩. ঐতিহাসিক অবস্থান


বিএনপি স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে গড়ে ওঠে। একাধিকবার সরকার পরিচালনা করার কারণে দলটির একটি স্থায়ী সমর্থক শ্রেণি তৈরি হয়েছে, যা এখনো টিকে আছে।



---

প্রকৃত জনসমর্থন কত শতাংশ বিস্তারিত দেখুন.... http://bit.ly/4oz4QE4

কেন সমর্থন কমছে?


১. সাংগঠনিক দুর্বলতা


বিএনপি দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকায় তৃণমূল পর্যায়ে অনেক জায়গায় সাংগঠনিক কার্যক্রম দুর্বল হয়ে পড়েছে।


২. নেতৃত্বের অনুপস্থিতি


দলের শীর্ষ নেতারা মাঠে প্রত্যক্ষভাবে সক্রিয় না থাকায় সাধারণ ভোটারদের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।


৩. আন্দোলনের ব্যর্থতা


বিগত বছরগুলোতে বিএনপি বেশ কয়েকবার আন্দোলন করলেও তা সফল হয়নি। ফলে অনেকের মধ্যে দলটির সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।


৪. অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব


দলীয় বিভক্তি ও গ্রুপিং রাজনৈতিক কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।



---


তরুণ ভোটারদের মধ্যে বিএনপি


বাংলাদেশের মোট ভোটারের প্রায় অর্ধেকই ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী। এ কারণে তরুণ ভোটারদের মন জয় করাই ভবিষ্যৎ রাজনীতির মূল চাবিকাঠি। জরিপে দেখা গেছে—


প্রায় ৩৯% তরুণ মনে করেন বিএনপি আগামী নির্বাচনে এগিয়ে থাকবে।


তরুণদের কাছে সবচেয়ে বড় ইস্যু হচ্ছে কর্মসংস্থান, শিক্ষা এবং সুশাসন।


যদি বিএনপি তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে এসব বিষয়কে গুরুত্ব দেয়, তবে তরুণ ভোটারদের আস্থা আরও বাড়তে পারে।




---


ভবিষ্যতের সম্ভাবনা


যদিও কিছু জরিপে বিএনপির সরাসরি ভোট পাওয়ার হার কম দেখা যাচ্ছে, তবে বাস্তব চিত্র অন্যরকমও হতে পারে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিবেশ দ্রুত পরিবর্তন হয়। কোনো আন্দোলন, ঘটনা বা নির্বাচনী প্রচারণা জনমতকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।


সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে পারলে বিএনপি আবারও শক্ত অবস্থান নিতে পারবে।


তরুণ ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে পারলে দলটি ভবিষ্যতে বড় সুবিধা পাবে।


আওয়ামী লীগের বাইরে জাতীয় পর্যায়ে অন্য কোনো শক্তিশালী দল না থাকায় বিএনপি এখনো প্রধান বিকল্প।




---


উপসংহার


বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপির ভূমিকা অস্বীকার করার উপায় নেই। বিভিন্ন জরিপে সমর্থনের হার ওঠানামা করলেও দলটির প্রতি জনগণের আগ্রহ এখনো যথেষ্ট। পরিবর্তনের আশা, ঐতিহাসিক ভূমিকা এবং তরুণ প্রজন্মের সমর্থন বিএনপিকে ভবিষ্যতে বড় রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। তবে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে হলে সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটানো, নেতৃত্বকে মাঠে সক্রিয় করা এবং তরুণ ভোটারদের আস্থা অর্জন করাই হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।


আরো পড়ুন.... http://bit.ly/4oz4QE4

---


🔖

Post a Comment

0 Comments