নোবেল পুরস্কারের ইতিহাস


  নোবেল পুরস্কার (Nobel Prize) সম্পর্কে বিস্তারিত


🔹 নোবেল পুরস্কারের ইতিহাস


নোবেল পুরস্কার হলো বিশ্বের সর্বোচ্চ সম্মানজনক আন্তর্জাতিক পুরস্কারগুলোর একটি। এর সূচনা করেন আলফ্রেড নোবেল (Alfred Nobel) — যিনি ছিলেন সুইডেনের একজন রসায়নবিদ, প্রকৌশলী ও ডায়নামাইটের আবিষ্কারক।

১৮৯৫ সালে মৃত্যুর এক বছর আগে আলফ্রেড নোবেল তাঁর উইলে উল্লেখ করেন যে, তাঁর সম্পদের বেশিরভাগ অংশ একটি তহবিলে রাখা হবে এবং সেই অর্থ থেকে প্রতিবছর এমন ব্যক্তিদের পুরস্কার দেওয়া হবে, যারা মানবজাতির কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন।


এইভাবেই ১৯০১ সাল থেকে নোবেল পুরস্কার প্রদান শুরু হয়।



---


🔹 কোন কোন ক্ষেত্রে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়?


নোবেল পুরস্কার বর্তমানে নিচের ছয়টি বিভাগে প্রদান করা হয়ঃ


1. পদার্থবিজ্ঞান (Physics)



2. রসায়ন (Chemistry)



3. চিকিৎসাবিজ্ঞান বা শারীরবিদ্যা (Medicine/Physiology)



4. সাহিত্য (Literature)



5. শান্তি (Peace)



6. অর্থনীতি (Economics) – এটি ১৯৬৯ সালে যুক্ত হয়, যা সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে।





---


🔹 পুরস্কার প্রদানকারী সংস্থা


প্রতিটি বিভাগে আলাদা প্রতিষ্ঠান পুরস্কার প্রদান করে থাকে —


Physics ও Chemistry: Royal Swedish Academy of Sciences


Medicine: Karolinska Institute


Literature: Swedish Academy


Peace: Norwegian Nobel Committee (নরওয়ে)


Economics: Sveriges Riksbank (Swedish Central Bank)




---


🔹 পুরস্কারের উপাদান ও সম্মাননা


প্রতিটি নোবেল বিজয়ী পান —


একটি স্বর্ণপদক (Gold Medal)


একটি সনদপত্র (Certificate)


এবং একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থ পুরস্কার, যা বছরে বছরে পরিবর্তিত হয় (প্রায় ১০ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনার পর্যন্ত হতে পারে)।




---


🔹 নোবেল শান্তি পুরস্কারের বিশেষত্ব


নোবেল শান্তি পুরস্কার অন্যান্য সব পুরস্কার থেকে কিছুটা আলাদা।

এই পুরস্কারটি সুইডেনে নয়, বরং নরওয়ের রাজধানী অসলো (Oslo)-তে প্রদান করা হয়।

শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয় এমন ব্যক্তি বা সংগঠনকে, যারা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা, মানবাধিকার রক্ষা বা দারিদ্র্য হ্রাসে অবদান রেখেছেন।



---


🔹 কিছু বিখ্যাত নোবেল বিজয়ী


রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৯১৩) – সাহিত্যে নোবেল প্রাপ্ত প্রথম এশীয় ব্যক্তি।


মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র (১৯৬৪) – শান্তি পুরস্কার।


মাদার তেরেসা (১৯৭৯) – শান্তি পুরস্কার।


ড. মুহাম্মদ ইউনুস ও গ্রামীণ ব্যাংক (২০০৬) – শান্তি পুরস্কার।




---


🔹 নোবেল পুরস্কারের উদ্দেশ্য


আলফ্রেড নোবেলের মূল উদ্দেশ্য ছিল —


> "মানবজাতির কল্যাণে যাঁরা সর্বোচ্চ অবদান রাখবেন, তাঁদের কাজকে স্বীকৃতি ও অনুপ্রেরণা প্রদান করা।"




এই পুরস্কার কেবল সম্মান নয়, এটি সারা বিশ্বের মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান, সাহিত্য ও মানবতার প্রতি আস্থা ও উদ্দীপনা সৃষ্টি করে।



---


🔹 সমালোচনা ও বিতর্ক


যদিও নোবেল পুরস্কার বিশ্বের সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার, তবুও এর সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেক সময় বিতর্ক হয়েছে।

অনেকে মনে করেন কিছু বছর কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা সংস্থা উপেক্ষিত হয়েছে, আবার কিছু সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক প্রভাবিত ছিল।



---


🔹 উপসংহার


নোবেল পুরস্কার আজও মানব সভ্যতার এক গর্ব।

এটি শুধু একজন ব্যক্তির সাফল্য নয়, বরং গোটা মানবজাতির অগ্রগতির প্রতীক।

যারা এই পুরস্কার পান, তাঁরা মানবতার ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকেন।



---


👉 মূল কথা:

নোবেল পুরস্কার হলো "মানবতার সর্বোচ্চ স্বীকৃতি" — যা মানুষকে ভালো কাজ, গবেষণা ও সমাজকল্যাণে উৎসাহিত করে।

Post a Comment

Previous Post Next Post

Blog Archive

kaler khota, কালের কথা, নিউজ, news

Lorem Ipsum is simply dummy text of the printing and typesetting industry. Lorem Ipsum has been the industry's.

About

Subscribe Us